Ticker

6/recent/ticker-posts

কম্পিউটারের প্রজন্ম ও ইতিহাস (What Is Computer & genertaion Of computer)

 

গণনাযন্ত্র, বা কম্পিউটার হল এমন একটি যন্ত্র যা সুনির্দিষ্ট নির্দেশ অনুসরণ করে গাণিতিক গণনা সংক্রান্ত কাজ খুব দ্রুত করতে পারে।


কম্পিউটার  শব্দটি গ্রিক "কম্পিউট" শব্দ থেকে এসেছে। 'Compute'  শব্দের অর্থ হল হিসাব বা গণনা করা। আর কম্পিউটার  শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। কিন্তু এখন আর কম্পিউটারকে শুধু গণনাকারী যন্ত্র বলা যায় না। কম্পিউটার এমন এক যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন করে। সভ্যতার বিকাশ এবং বর্তমানে তার দ্রুত অগ্রগতির মূলে রয়েছে গণিত ও কম্পিউটারের প্রবল প্রভাব। পশ্চিমবঙ্গে প্রথম কম্পিউটার আসে ১৯৬৪ সালে।

কম্পিউটারের ইতিহাস  

পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার হল (এনিয়াক)

ENIAC

প্রাগৈতিহাসিক যুগে গণনার যন্ত্র উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রচেষ্টাকে কম্পিউটার ইতিহাস হিসেবে ধরা হয়। প্রাচীন কালে মানুষ একসময় সংখ্যা বুঝানোর জন্য ঝিনুক, নুড়ি, দড়ির গিট ইত্যাদি ব্যবহার করত। পরবর্তীতে গণনার কাজে বিভিন্ন কৌশল ও যন্ত্র ব্যবহার করে থাকলে ও অ্যাবাকাস  নামক একটি প্রাচীন গণনা যন্ত্রকেই কম্পিউটারের ইতিহাসে প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়। এটি আবিষ্কৃত হয় খ্রিষ্টপূর্ব ২৪০০ সালে । অ্যাবাকাস হল ফ্রেমে সাজানো গুটির স্থান পরিবর্তন করে গণনা করার যন্ত্র। খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০ থেকে ৫০০ অব্দে মিশরে বা চীনে গণনা যন্ত্র হিসেবে অ্যাবাকাস তৈরি হয়।

১৬১৭ সালে স্কটল্যান্ডের গণিতবিদ জন নেপিয়ার গণনার কাজে ছাপা বা দাগ কাটাকাটি অথবা দন্ড ব্যবহার করেন। এসব দন্ড জন নেপিয়ার এর অস্থি নামে পরিচিত। ১৬৪২ সালে ১৯ বছর বয়স্ক ফরাসি বিজ্ঞানী ব্লেইজ প্যাসকেল সর্বপ্রথম যান্ত্রিক ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করেন। তিনি দাঁতযুক্ত চাকা বা গিয়ারের সাহায্যে যোগ বিয়োগ করার পদ্ধতি চালু করেন। ১৬৭১ সালের জার্মান গণিতবিদ গটফ্রাইড ভন লিবনিজ প্যাসকেলের যন্ত্রের ভিত্তিতে গুণ ও ভাগের ক্ষমতাসম্পন্ন আরো উন্নত যান্ত্রিক ক্যালকুলেটর তৈরি করেন। তিনি যন্ত্রটির নাম দেন রিকোনিং যন্ত্র । পরে ১৮২০ সালে টমাস ডি কোমার রিকোনিং যন্ত্রের পরিমার্জন করে লিবনিজের যন্ত্রকে জনপ্রিয় করে তোলেন।

উনিশ শতকের শুরুর দিকে আধুনিক একটি যন্ত্রের নির্মাণ ও ব্যবহারের ধারণা (যা কেবলমাত্র যান্ত্রিকভাবে, মানে যেকোনও রকম বুদ্ধিমত্তা ব্যতিরেকে, গাণিতিক হিসাব করতে পারে । প্রথম সোচ্চার ভাবে প্রচার করেন চার্লস ব্যাবেজ। তিনি এটির নাম দেন ডিফারেন্স ইঞ্জিন । এই ডিফারেন্স ইঞ্জিন নিয়ে কাজ করার সময় (১৮৩৩ সালে) তিনি অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামে আরও উন্নত ও সর্বজনীন একটি যন্ত্রে ধারণা লাভ করেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও অর্থের অভাবে কোনোটির কাজই তিনি শেষ করতে পারেননি।

কম্পিউটার বিজ্ঞানের সত্যিকার সূচনা হয় অ্যালান টুরিং এর প্রথমে তাত্ত্বিক ও পরে ব্যবহারিক গবেষণার মাধ্যমে। বিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে আধুনিক কম্পিউটারের বিকাশ ঘটতে শুরু করে। ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবনের ফলে মাইক্রোকম্পিউটারের দ্রুত বিকাশ ঘটতে থাকে। বাজারে প্রচলিত হয় বিভিন্ন প্রকৃতি ও আকারের কম মূল্যের অনেক রকম পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি । সে সঙ্গে উদ্ভাবিত হয়েছে অনেক রকম অপারেটিং সিস্টেমপ্রোগ্রামের ভাষা, অগণিত ব্যবহারিক প্যাকেজ প্রোগ্রাম। এরসাথে ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের এবং সংশ্লিষ্ট সেবা ও পরিসেবার। কম্পিউটার শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ও সম্প্রসারিত হয়েছে, অসংখ্য প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক কম্পিউটার শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। সাম্প্রতিক কালে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি বা আইটি ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরাট অংশ দখল করেছে, এবং কর্মসংস্থান হয়ে পড়েছে অনেকাংশেই কম্পিউটার নির্ভর।

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টেল কর্পোরেশন ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবন করার পর থেকে বাজারে আসতে শুরু করে মাইক্রোপ্রসেসর ভিত্তিক কম্পিউটার। তখন থেকে কম্পিউটারের আকৃতি ও কার্যক্ষমতায় এক বিরাট বিপ্লব সাধিত হয়। ১৯৮১ সালে বাজারে আসে আই.বি.এম কোম্পানির পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি। এর পর একের পর এক উদ্ভাবিত হতে থাকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোপ্রসেসর এবং তৈরি হতে থাকে শক্তিশালী পিসি। আই.বি.এম কোম্পানি প্রথম থেকেই আই.বি.এম কমপ্যাটিবল কম্পিউটার  তৈরির ক্ষেত্রে কোনো বাধা-নিষেধ না রাখায় এ ধরনের কম্পিউটারগুলির মূল্য ব্যাপকহারে হ্রাস পায়, এবং এর ব্যবহারও ক্রমাগত বাড়তে থাকে। একই সময় আই.বি.এম কোম্পানির পাশাপাশি অ্যাপল কম্পিউটার ইনকর্পোরেট  তাদের উদ্ভাবিত অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ কম্পিউটার বাজারে ছাড়ে। কিন্তু অ্যাপল কোম্পানি তাদের কমপ্যাটিবল কম্পিউটার তৈরির ক্ষেত্রে কোনোরূপ উদারতা প্রদর্শন না করায় ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের মূল্য থেকে যায় অত্যধিক বেশি, যার ফলে অ্যাপল তেমন জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে নি। তবে বিশেষ ধরনের কিছু ব্যবহারিক সুবিধার কারণে মূলত মুদ্রণ শিল্পে অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো।


কম্পিউটারের প্রজন্ম (Generation of computer)

 কম্পিউটার সংক্রান্ত আলােচনায় 'প্রজন্ম' বলতে প্রযুক্তিগত ধাপকে বােঝায় । অর্থাৎ , কম্পিউটারের প্রজন্মের ধারাকে বিশ্লেষণ করা হলে কম্পিউটার নামক যন্ত্রের বিকাশের পর্যায়গুলিকে জানা যাবে । প্রকৃতপক্ষে , বৈদ্যুতিক প্রযুক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কম্পিউটারের বিকাশ ঘটে ।
কম্পিউটারকে জেনারেশন হিসেবে ভাগ করার প্রথা চালু হয় আইবিএম কোম্পানির একটি বিজ্ঞাপন থেকে।

প্রথম প্রজন্ম (First generation 1942 - 1955 ) : 1942 থেকে 1955 সালের মধ্যে যেসব কম্পিউটার তৈরি হয়েছে , সেগুলিকে বলা হয় প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার । ঐ সব কম্পিউটারের গঠনতান্ত্রিক কাঠামাের মূল বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ ছিল ভ্যাকুয়াম টিউব । প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রতীক হিসাবে এই সব কম্পিউটারের নানা সুবিধা থাকলেও ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এগুলির কিছু অসুবিধা ও ছিল  


প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য 

1 কম্পিউটারের ইলেকট্রনিক এর মুখ্য যন্ত্রাংশ ভ্যাকুয়াম টিউব এটি হলো প্রচুর তাপ উৎপাদনকরে ।

2.প্রজন্মের কম্পিউটার গুলির আকৃতি ছিল সর্ববৃহৎ। 

3.এই কম্পিউটার গুলির কাজ করার গতি ছিল অত্যন্ত ধীর অথবা কম। 

4.তথ্যের ভিত্তিতে ফল প্রকাশের ক্ষমতা ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। 

৫.এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলো ছিল অত্যন্ত মূল্যবান অনেক দামি। 

উদাহরণ 

কয়েকটি প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারের নাম হল ইয়েন আইএসসি, ইদি এসএসসি মার্ক ওয়ান। 

অসুবিধা গুলি হল 

প্রথমত , এইসব কম্পিউটার ছিল আকারে বিরাট বড় । দ্বিতীয়ত , তাপ নিয়ন্ত্রণ ছাড়া এগুলিকে ব্যবহার করা যেত না । তৃতীয়ত , প্রায়ই এসব ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়ত ।  যেমন , ভ্যাকুয়াম টিউব প্রায়ই খারাপ বা নষ্ট হয়ে যেত । তখন তা বদলানাে ছাড়া উপায় থাকত না । পঞ্চমত , এগুলি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার উপযােগী ছিল না ।

দ্বিতীয় প্রজন্ম: 

কম্পিউটারের দ্বিতীয় প্রজন্ম হল ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৬৫ সাল, ১৯৫৮ সালে Jack Cent Clear নামক একজন বিজ্ঞানী Integrated Circuit বা IC তৈরী করেন।  দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে স্বভাবতই আরও উন্নত প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা হয় । উন্নততর প্রযুক্তির মাধ্যমে এই পর্যায়ের কম্পিউটারে মূল বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ হিসাবে ভ্যাকুয়াম টিউবের বদলে ট্রানজিস্টর লাগানাে হয় । এই কম্পিউটারগুলির বিভিন্ন যন্ত্রাংশও ছিল আকারে তুলনামূলকভাবে ছোট

দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য 

Transistor

·         ১. এই প্রজন্মের কম্পিউটারে ব্যবহার হত ট্রানজিস্টার ও ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট।

·         ২. প্রথম প্রজন্মের তুলনায় কম্পিউটারের আকৃতি ছোট ছিল। 

·         ৩. চৌম্বকীয় ক্যরস ব্যবহার। 

·         ৪. বিদ্যুৎ খরচ ও অনেক কম হত 

·         ৫. কার্য সম্পাদন গতির, প্রোগামিং ভাষা, ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস উন্নত মানের ছিল। 

·         ৬. টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে ডেটা স্থানান্তরের সুবিধা ছিল।

·         ৭. প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারের তুলনায় দাম কম। 

·         ৮. তাপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা এই প্রজন্মের কম্পিউটারেও ছিল। 

উদাহরণঃ IBM-1401, CDC-1604, RCA-501, NCR-304, Honeywell 200, PDP- I ,IBM- 7000IBM-1620, GE 200, IBM-1600  ইত্যাদি।

 এখন দেখা যাক , দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে কী কী সুবিধা ছিল । 

 দ্বিতীয়ত , চালু অবস্থায় এগুলি থেকে কম তাপ উৎপন্ন হতাে । তৃতীয়ত , এই কম্পিউটারগুলি তথ্য বিন্যাসের কাজ দ্রুত করতে পারত । চতুর্থত , এগুলি কম বিকল হতাে ।
তবে দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারেও বেশ কিছু অসুবিধা লক্ষ্য করা গিয়েছিল ।

 প্রথমত , এগুলি ব্যবহারের জন্য তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দরকার হত । দ্বিতীয়ত , এগুলি রক্ষণাবেক্ষণে অল্প সময়ের ব্যবধানে বারবার প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ নিতে হতাে । তৃতীয়ত , এগুলির বাণিজ্যিক উৎপাদন পদ্ধতি ছিল বেশ জটিল এবং ব্যয়বহুল ।

 তৃতীয় প্রজন্ম :
কম্পিউটারের তৃতীয় প্রজন্ম হল ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৭২ সাল। এই প্রজন্মের কম্পিউটারে  (SSI) সার্কিট এবং  (MSI) সার্কিট ব্যবহৃত হওয়ার কারনে এই প্রজন্মের কম্পিউটারকে তৃতীয় জেনারেশন বা Integrated Circuit Computer বলা হয়।   দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটাৱে ব্যবহার করা হয়েছিল ট্রানজিস্টর । তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে তার জায়গা নিলাে ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ( আই সি ) , যা সাধারণত সিলিকনের একটি মাত্র টুকরের উপরে তৈরি অতি ক্ষুদ্র স্থানে সীমাবদ্ধ বিদ্যুৎ সঞ্চালন চক্র । যে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আই সি - র এই ব্যবহার , তার নাম  লার্জ স্কেল ইন্টিগেশন ( এল এস আই ) টেকনােলজি । দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারের তুলনায় আরও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে অসুবিধার মাত্রা খুবই কমে আসে , 

সুবিধা বেড়ে যায় অনেকটাই । 

প্রথমত , তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারগুলি ছিল আকারে ছোট । দ্বিতীয়ত , এগুলি ব্যবহারের সময় কম তাপ উৎপন্ন হতাে । তৃতীয়ত , এগুলি তথ্য বিন্যাসের কাজ দ্রুত করতে পারত । চতুর্থত , এগুলি রক্ষণাবেক্ষণের খরচ ছিল কম । পঞ্চমত , এই কম্পিউটারগুলি ছিল বহনযােগ্য । অর্থাৎ , সহজেই এগুলিকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া যেত । যষ্ঠত , এগুলি চালাতে কম বিদ্যুৎ শক্তির প্রয়ােজন হতাে । সপ্তমত , এগুলির বাণিজ্যিক উৎপাদন ছিল তুলনামূলকভাবে সহজ এবং এর খরচ ছিল কম।

তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে বৈশিষ্ট্য :

IC (Integrated Circuit)

·         ১. দ্বিতীয় প্রজন্মের তুলনায় আকারে আরও ছোট ছিল এই কম্পিউটার। 

·         ২. ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (IC) এর ব্যাপক প্রচলন দেখা গেল। 

·         ৩. ভিডিও ডিসপ্লে ইউনিট, লাইন প্রিন্টার ইত্যাদি আউটপুট ডিভাইস প্রচলন।

·         ৪. শুরু হল মাউসের ব্যবহার।

·         ৫. এই প্রজন্মের কম্পিউটারের গঠন আরও জটিল হয়।

এই প্রজন্মের কম্পিউটারের উদাহরণ  IBM-370, PDP-8, PDP-2, GE-600, IBM 960,  CDC- 1700 ইত্যাদি।


 চতুর্থ প্রজন্ম :

১৯৭৩ সাল থেকে ২০০০ সালকে কম্পিউটারের চতুর্থ প্রজন্ম বলে ধরা হয়। তৃতীয় প্রজন্মের এল এস আই প্রযুক্তির জায়গায় চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটারে ব্যবহার করা হলাে ভেরি লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেশন টেকনােলজি বা ভি এল এস আই প্রযুক্তি । এই প্রযুক্তির ভিত্তিতে কম্পিউটারে বসানাে হলাে মাইক্রোপ্রসেসর ।  উইন্ডােজ, ডস (DOS) অপারেটিং সিস্টেমের ব্যবহার শুরু হয় এই প্রজন্মে। স্বভাবতই এর ব্যবহারিক

সুবিধা বেড়ে গেল অনেক গুণ ।

 প্রথমত , এই কম্পিউটারের উৎপাদন ব্যয় অনেকটা কমে এলাে । দ্বিতীয়ত , এগুলি তথ্য বিন্যাসের ভূমিকা পালনের প্রশ্নে খুবই দ্রুতগতি সম্পন্ন । তৃতীয়ত , এগুলির স্মৃতিভাণ্ডার খুবই বড় । অর্থাৎ , এই কম্পিউটারগুলি তাদের স্মৃতি বা মেমােরিতে একসঙ্গে বিশাল পরিমাণ তথ্য সংরক্ষণ করে রাখতে বা ধরে রাখতে পারে । চতুর্থত , এগুলি আকারে বেশ ছোট। পঞ্চমত , এগুলি চালাতে কম বিদ্যুৎ লাগে ।

চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য গুলি হল :

·         ১. মাইক্রোপ্রসেসর এর উদ্ভব ও ব্যবহার শুরু হয় এই প্রজন্মের কম্পিউটারে। 

·         ২. তথ্য সঞ্চয় ক্ষমতা পূর্বের তুলনায় অনেক বেড়ে যায়। 

·         ৩. বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের ব্যবহার।

·         ৪. মাইক্রোকম্পিউটারের  প্রচলন বৃদ্ধি পায় এই প্রজন্মের কম্পিউটারে। 

·         ৫. তাপ নিয়ন্ত্রণের কোনো প্রয়োজনীয়তা ছিল না

·         ৬. কম বিদ্যুৎ শক্তি প্রয়োজন হত। 

এই প্রজন্মের কম্পিউটারের উদাহরণ হল :

IBM-3033, HP-3000, IBM-4341, TRS-40, IBM PC, DEC-10, STAR- 1000,PPR- II, APPLE- II, IBM- 4341 ।

পঞ্চম প্রজন্ম
:

1989 থেকে তার পরবর্তী সময় 

 চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটারে ব্যবহার করা U,L,S,I (Ultra Large Scale Integration) এই প্রযুক্তির ভিত্তিতে কম্পিউটারে বসানাে হলাে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ। এই প্রজন্মের কম্পিউটারে প্যারালাল প্রসেসিং হার্ডওয়ার এবং A, I (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট) প্রথম ব্যবহার করা হয়।

এই প্রজন্মের কম্পিউটারগুলিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষমতা বিকশিত হচ্ছে, তারা সে অনুযায়ী কাজ করবে।

নিজের জন্য চিন্তা করার ক্ষমতা তৈরি করা হচ্ছে এই প্রজন্মের কম্পিউটারগুলিতে। কম্পিউটারগুলিকে প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হচ্ছে এবং কিছুটা সাফল্যও অর্জন করা হয়েছে, উদাহরণস্বরূপ, আপনি (Windows Cortana), (Google Assistant), (Apple Siri) ইত্যাদি দেখেছেন।

এতে উচ্চ স্তরের প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। G,U,I (Graphical User Interface) এর সহায়তায় এটি আরও সহজ করা হচ্ছে। এই কম্পিউটারগুলি কোনও সমস্যা সমাধানের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে কারণ তারা একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত রয়েছে। কিছু কম্পিউটার মানুষের মতো আচরণ করার জন্য এবং সমস্ত কাজ নিজেই করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যাকে রোবট বলা হয়। এর সর্বোত্তম উদাহরণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক রোবট সোফিয়া

আপনি অবশ্যই মার্ভেল আয়রন ম্যান (2008), টনি স্টার্কের (রবার্ট ডাউনি জুনিয়র) J.A.R.V.I.S. সিনেমাটি দেখেছেন এবং F.R.I.D.A.Y.। আপনি নিশ্চয়ই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেম সম্পর্কে শুনেছেন। আপনি যদি না শুনে থাকেন তবে কিছু যায় আসে না, আমি আপনাকে বলি, J.A.R.V.I.S এবং F.R.I.D.A.Y একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেম যা আয়রন ম্যানের সাথে কথা বলতে পারে, এটি অ্যাপল সিরির সাথে অনুরূপ তবে এর চেয়ে 200000 গুণ বেশি উন্নত। এটি অনেক কিছুই করতে পারে। মানুষের মতো কথা বলা, বিশ্লেষণ করা, অনুকরণ করা, অনুলিপি করা, আপলোড করা, হ্যাকিংয়ের পাশাপাশি আয়রণ ম্যানের মামলা এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করা ইত্যাদি।

যদিও এটি অনুমানমূলক, তবে শোনা যাচ্ছে যে 2050 সালের মধ্যে আমরা অনুরূপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দেখতে পাব। 

স্বভাবতই এর ব্যবহারিক সুবিধা বেড়ে গেল অনেক গুণ । প্রথমত , এই কম্পিউটারের উৎপাদন ব্যয় কমে এলাে । দ্বিতীয়ত , এগুলি তথ্য বিন্যাসের ভূমিকা পালনের প্রশ্নে খুবই দ্রুতগতি সম্পন্ন । তৃতীয়ত , এগুলির স্মৃতিভাণ্ডার খুবই বড় । অর্থাৎ , এই কম্পিউটারগুলি তাদের স্মৃতি বা মেমােরিতে একসঙ্গে বিশাল পরিমাণ তথ্য সংরক্ষণ করে রাখতে বা ধরে রাখতে পারে । চতুর্থত , এগুলি আকারে বেশ ছোট । পঞ্চমত , এগুলি চালাতে কম বিদ্যুৎ লাগে ।

এই প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল :

·         ১.  বহু কাজ একসাথে দ্রুত করতে পারে এই প্রজন্মের কম্পিউটার, 

·         ২. প্রসেসরের গতি বৃদ্ধি হয়, 

·         ৩. তাপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা নেই এই প্রজন্মের কম্পিউটারে। 

·         ৪. অপারেটিং সিস্টেম উন্নত মানের হয়। 

·         ৫. এই প্রজন্মের কম্পিউটারে নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের ব্যবহার সাধারণের মধ্যেও দেখা যায়।  

·         ৬. এই প্রজন্মের কম্পিউটারের দাম পূর্বের চার প্রজন্মের তুলনায় অনেক কম। 

এই প্রজন্মের কম্পিউটারের উদাহরণ হল 

DEV VAX-780, Intel iPSC-1, Desktop, Laptop, Notebook, Ultrabook, Chrombook ইত্যাদি।

Post a Comment

0 Comments